

মুহিদের বয়স যখন আট বছর তখন তার মা সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যায়। তার মা মারা যাওয়ার পর থেকে, সে ভয়ে ভয়ে থাকে। মানুষের সাথে পূর্বের ন্যায় মিশতে পারে না। কোন কিছুর জোরে শব্দ হলে ভয়ে আতঙ্কে ওঠে । তার মধ্যে সব সময় ভয় কাজ করে।তার বাবা একজন প্রাইমারী স্কুলের প্রধান শিক্ষক। তার একজন বোন আছে । তার থেকে তিন বছরের ছোট। মুহিদ অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। তার বোন এবার কলেজে ফাস্ট ইয়ারে ভর্তি হয়েছে ।মুহিদ মেসে থাকে । তার রুমমেট তার স্কুলের বন্ধু মুহিত। মুহিত যেই দিন রাতে মেসে থাকে না ,বা কোন কাজে বাড়িতে যায়। সেই দিন রাতে মুহিদের মেসে খুব কষ্ট হয়। রাতটা খুব কষ্টে যায়! রুমে একাই থাকতে ভীষণ ভয় পাই । রাতের খাবার খেয়ে; রুমে বাল্ব চালু রেখে তাড়াতাড়ি ঘুমিয়ে পড়ে ১০ টার মধ্যে। রাত ৩ টায় ঘুম ভেঙে যায়। ঘুম থেকে উঠে ভীষণ ভয় পাই ।বাহিরে কোন কিছুর পরার শব্দ পেলে, বেশী ভয় পাই । তার মনে হয় ভুত শব্দ করেছে। সে একাই রুমে খুব অসহায় বোধ করে । তার মনে হয় কেউ তাকে মারতে আসতেছে । সে জানালা খুলে দেয়।ভোর না হওয়া পর্যন্ত জানালার গরাদ শক্তভাবে দুই হাত দিয়ে ধরে থাকে, বাহিরে তাকিয়ে থাকে অপলক দৃষ্টিতে ।একদিন সন্ধ্যায় মুহিদের বাবা খুব অসুস্থ হয়ে পড়ে। তার বোন কল দিয়ে দ্রুত বাড়ি আসতে বলে। বাড়ি আসার পথে হঠাৎ রাস্তায় বাসের চাকা নষ্ট হয়ে যায় । অতিরিক্ত চাকা সাথে নাই বলে , রাতের মধ্যে গাড়ি ঠিক করা সম্ভব না ।পেসেঞ্জাররা যে যার মতো কোন উপায় না দেখে, গাড়ি ছেড়ে বাসায় যাচ্ছে।মুহিদ চিন্তা মগ্ন হয়ে পড়ে, চিন্তার ভারে তার সব ভয় কেটে গেছে । এতো রাতে গাড়ি ও পাওয়া যায় না । একসাথে যাওয়ার জন্য কোন পরিচিত লোক ও সাথে নেই। সে ঘামে ভিজে যাচ্ছে । রাস্তায় অনেক ক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকে ।কোন উপায় না পেয়ে, একাই হাঁটতে শুরু করে।মাথার উপরে আকাশ ভরা জ্যোৎস্নার আলো।হাঁটতে হাঁটতে সে যখন একটা বিশাল বড় আমবাগানের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল তখন সেএকটা কণ্ঠের শব্দ শুনতে পেল।
0 Comments