

দিপক এক প্রত্যন্ত অঞ্চলের বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছাত্র। তার বাবা একজন দিনমজুর। বাবার একমাত্র ইচ্ছে—দিপক যেন তার মতো অন্যের বাড়িতে কাজ না করে, মানুষের মতো বাঁচতে পারে এবং জীবনে ভালো কিছু করতে পারে।দিপক সহজ-সরল ও মেধাবী। আগে সে কোনোদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো বড় জায়গায় আসেনি । বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে সব কিছুই তার নতুন মনে হয়। অনেক নতুন বন্ধু-বান্ধবের সাথে পরিচয় হয়।প্রচলিত নিয়মানুযায়ী, নতুন ব্যাচ আসলে সিনিয়র ভাই ও আপুরা “র্যাগিং” দেয়—যাকে বাংলায় বলে “মেনার শেখানো”। দিপক যেহেতু প্রত্যন্ত অঞ্চলের সরল ছেলে, তাই তাকে সিনিয়ররা বেশি শাস্তি দিত। প্রতিবাদ করার সাহস ছিল না তার। তবে তার ক্লাসের সহপাঠীরা তাকে ভালোবাসত ও বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করত। তাদের মধ্যে সুজন ও মদন ছিল তার সবচেয়ে ঘনিষ্ঠ বন্ধু।কিন্তু পরিবারের অবস্থা ছিল শোচনীয়। যেদিন তার বাবা টাকা পাঠাত, সেদিন তার পরিবার অনাহারে থাকত। তার বড় মামা ঢাকায় চাকরি করেন, মাঝে মাঝে তাকে কিছু টাকা পাঠাতেন। তবুও চলত না। শহরে এসে দিপক টিউশন খুঁজেও কিছু পায়নি । ফলে প্রায় দিনই অনাহারে থাকতে হতো তাকে।যে মেসে থাকত, সেটি অনেক পুরোনো দিনের। ভাড়া মাসে ৫০০ টাকা। মিল চার্জ দিনে তিন বেলায় ৫০ টাকা। রাতে টেবিলে বই খুললেও চোখের সামনে ভেসে উঠত মায়ের-বোনের অনাহারে থাকার চেহারা। ঘুম আসত দেরিতে। শুয়ে শুয়ে ভাবত—কীভাবে অর্থ উপার্জন করবে?প্রথম সেমিস্টারের ফাইনালে দিপক তার কাঙ্ক্ষিত রেজাল্ট করতে পারেনি।
0 Comments