#গল্পলক্ষি বউআফছানা খানম অথৈস্নিগ্ধা আর জয়ের আট বছরের রিলেশন।তাদের উপর দিয়ে অনেক ঝড় তুফান বয়ে চলেছে।জয়ের পরিবারের কেউ তাদের ভালোবাসা মেনে নিচ্ছে না।কিন্তু তারা একে অপরের প্রেমে উতলা।কেউ কাউকে ছেড়ে থাকতে পারছে না।এক পলক না দেখলে মন প্রাণ উতালা।রাতজেগে ফোনে প্রেমের আলাপ-সালাপে ব্যস্ত থাকে। রাত শেষ হয়ে যায় তবুও তাদের কথা শেষ হয় না।ব্যাটারি লো করে তবে কথা শেষ হয়।কোনো কারণে যদি ফোন কানেকশ না পায়।তাহলে গোপন অভিসারে দেখা সাক্ষাত করে দু\'জন।তাদের প্রেম একেবারে পাকা।কিন্তু পরিবার মানছে না।এখন উপায়।বন্ধু-বান্ধবী সবার সাথে পরামর্শ করলে,সবাই বলে গোপনে বিয়ে করতে।কিন্তু জয় রাজী হচ্ছে না।বাবা-মাকে না জানিয়ে বিয়ে করলে উনারা যদি রাগ করেন।এদিকে জয়কে বিয়ে করানোর জন্য মা-বাবা পাত্রী দেখা শুরু করে।কথাটা শোনামাত্রই স্নিগ্ধার হৃদকম্প শুরু...।যে জয়কে ফোন দিয়ে বলে,জয় তোমার জন্য নাকি পাত্রী দেখা হচ্ছে?হ্যাঁ দেখছে তো।তুমি ওদের পছন্দে বিয়ে করবে?না করব না।তাহলে মেয়ে দেখতে গেলে কেন?না গেলে মা-বাবা কষ্ট পাবে তাই গিয়েছি।জয় আমি তোমাকে অনেক অনেক ভালোবাসি।তোমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করতে পারব না।তুমি তোমার মা-বাবাকে বুঝাও।আমাদের ভালোবাসার কথা বলো।আমি তোমার লক্ষি বউ হয়ে সারাজীবন তোমার পাশে থাকতে চায়।স্নিগ্ধা আমিও তোমাকে ভালোবাসি।তোমাকে ছাড়া কাউকে বিয়ে করতে পারব না।সত্যিই বলছ তো?সত্যি সত্যি তিন সত্যি।তো এখন কী করবে?.যেমন করে হোক বাবা-মাকে রাজী করাব।তুমি মন খারাপ করোনা লক্ষি বউ আমার।আচ্ছা করব না।তুমি সেদিক ম্যানেজ কর।হুম করব।তারা আরও কিছু সময় কথা বলে।তারপর ঘুমিয়ে পড়ে।পরদিন জয় তার মাকে জড়িয়ে ধরে তার ভালোবাসার কথা বলল।স্নিগ্ধাকে ছাড়া আর কাউকে বিয়ে করবে না বলে জানিয়ে দিলো।যদি তারা রাজী না হয় সুইসাইড করবে বলে জানিয়ে দিলো।জয়ের মা অনেক কষ্টে তার বাবাকে রাজী করায়।তারপর দু\'পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে সম্পন্ন হয়।স্নিগ্ধা জয়ের বউ হয়ে সেই বাড়িতে আসে।শ্বশুর-শ্বাশুড়ি সবার মন যুগিয়ে চলতে চেষ্টা করে।কিন্তু মজার বিষয় হলো সে যতই ভালো কাজ করে পরিবারের কারো পছন্দ হয় না।সবাই তার খুঁত ধরে।শ্বাশুড়ি তেমন একটা ভালো চোখে দেখে না।কথায় কথায় ছোট জাত বলে খোটা দেয়।সগুধু তাই নয় ছেলেকে নিয়মিত কানপড়া দিতেছে।ছেলে প্রথমে এসব আমলে না নিলেও পরবর্তীতে মায়ের পক্ষে চলে যায়।আগের মতো স্নিগ্ধার সাথে ভালো ব্যবহার করে না।কথায় কথায় দোষ ধরে।একটু ভুলত্রুটি হলে গায়ে হাত তোলে।স্নিগ্ধা ভাবে তার ভালোবাসার জয় এমন রুঢ আচরণ করছে কেন?সে মানসিক ডিপলেশনে ভোগে।কাউকে কিচ্ছু বলে না।এমন কি মা বাবাকেও না।সে নীরবে সবকিছু সহ্য করে নেয়।তার ধারণা আজ না হয় কাল শ্বাশুড়ি তাকে ঠিকই মেনে নেবে।কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে ততই নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে চলেছে।দফায় দফায় কিছু না কিছু দাবী করে চলেছে।স্নিগ্ধার পরিবার থেকে উপহার হিসেবে যতটুকু সম্ভব দিয়েছে,ঘর সাজানোর ফার্নিচার, জয়ের জন্য আংটি চেইন তার মা বাবা ভাই বোন সবার জন্য কাপড় ইত্যাদি।এরপর ও তাদের চাহিদার শেষ নেই।যত পায় তত চায়।জয়ের চাকরী হবে,দশ লাখ টাকা ঘুষ লাগবে।এই টাকার জন্য তাকে চাপ দেয়। কিন্তু এত টাকা স্নিগ্ধার মায়ের দেয়ার মতো সামর্থ্য নেই।তাই সে তার মাকে জানাইনি।জানাইনি কেন এই নিয়ে স্বামী স্ত্রীর মাঝে কথাকাটাকাটি হয়।তা চরম লেভেলে চলে যায়।জয়ের ছাপছাপ কথাতোকে দশ লক্ষ টাকা আনতে হবে।প্লিজ জয় বুঝতে চেষ্টা কর।আমার মায়ের কাছে এত টাকা নেই।তোমার বাবার তো অনেক টাকা আছে সেখান থেকে নাও।বাবা বলেছে আমাকে কোনো টাকা দিবে না।তুমি আবার চাও, ওদের হাতে পায়ে ধর।ঠিক উনারা দেবেন।না আমি পারব না।তুই যা তোর বাবার বাড়ি থেকে টাকা নিয়ে আয়।না আমি যাব না।যেতে তোকে হবেই।তা না হলে মার খাবি।প্লিজ জয় শান্ত হও।না আমি শান্ত হব না।আমার দশ লাখ টাকা চাই,চাই এক্ষুণি।স্নিগ্ধা তার হাতে পায়ে ধরে মাফ চাই।তাকে শান্ত হতে বলে।কিন্তু সে শোনে না।জয়ের রাগের মাত্রা চরম লেভেলে চলে যায়।সে স্নিগ্ধার গায়ে হাত তোলে।এর আগেও সে স্নিগ্ধার গায়ে কয়েকবার হাত তুলেছিল।স্নিগ্ধা কোনো প্রতিবাদ করেনি।নীরবে হজম করেছে।কিচ্ছু বলেনি।ভেবেছিল আস্তে আস্তে সব ঠিক হয়ে যাবে।।কিন্তু কিচ্ছু ঠিক হয়নি।আজ তা ভয়ঙ্কররুপে ফুটে উঠেছে।ভালোবাসার স্নিগ্ধা এখন জয়ের চোখের শুল।সে এখন তাকে সহ্য করতে পারছে না।কারণে অকারণে খারাপ ব্যবহার করে।যখন তখন গায়ে হাত তোলে।আজও অনুরুপ তাই করেছে।স্নিগ্ধা একটু প্রতিবাদ করেছে।এই সেরেছে সে রাগাম্ভিত হয়ে উঠে এবং তার মাথায় লাঠি দিয়ে আঘাত করে।এর সঙ্গে যোগ দেয় পরিবারের সবাই।সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যায়।তারপর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোদ করে বালিশ চাপা দিয়ে তাকে মেরে ফেলে। অত:পর ওড়না পেঁচিয়ে তাকে সিনিং ফ্যানের সঙ্গে ঝুলিয়ে রেখে, মায়ের কাছে খবর পাঠায়,স্নিগ্ধা আত্মহত্যা করেছে।তারপর সে তার মুঠোফোন নিয়ে পালিয়ে যায়।স্নিগ্ধার মা পুলিশকে জানায়, তার মেয়ে আত্মহত্যা করেনি।তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।পুলিশ লাশ পোস্টমর্টেমের জন্য নিয়ে যায়।পোস্টমর্টেম রিপোর্ট বের হওয়ার পর আসল সত্য প্রকাশ হয়।স্নিগ্ধা আত্মহত্যা করেনি। তাকে মেরে ফেলা হয়েছে।তার শরীর ও মাথায় আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে।মাথার পেছনের অংশ থেথলে গেছে।স্নিগ্ধার মা বাদী হয়ে জয় ও তার মা বাবার জন্য মামলা দায়ের করেন।এদিকে তার সহপাঠিরা বিক্ষোভ মিছিল বের করে।তারা জয়কে দ্রুত এরেস্ট করে ফাঁসির রায় কার্যকর করার দাবী জানায়। #viralpost2025
0 Comments