হাজারো ভাবনায় ডুবে থেকে,কতশত শ্রম দিয়ে যে আমার স্বচ্ছ-সরল অনুভূতিগুলো সাজিয়ে গুছিয়ে তোমার ঐ মায়াবী দু\'চোখের সামনে উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি,তা বলা মুশকিল।তারপরেও মনে হয় এতোটা খারাপভাবে পৃথিবীর কেউ কোনো কালে লিখে নাই।জানিনা,লেখাগুলো তোমার মনের মতো হয়েছে কিনা।এও জানিনা লেখাগুলো পড়ার পর তুমি গালে হাত রেখে,একটু এদিক-ওদিক তাকিয়ে একটা মুচকি হাসি দিবে কিনা বা আমার মতো হতচ্ছাড়ার কথা দ্বিতীয়বার ভাববে কিনা।তবে আমি নিশ্চিত,এতে আমার হৃদয়ের নিবিড় অনুভূতিগুলো নিশ্চলভাবে মিশে আছে। আমি দেখিয়াছি তোমারে_, এপারের জানালা খুলে ওপারের জানালার অন্তরালে। সেদিন তোমার পরনে একটা লাল রংয়ের টি-শার্ট ছিল।তোমার কালো কেশগুচ্ছ একপাশে সিঁথি করে বাধা ছিল।কিন্তু কয়েকগোছা অবাধ্য চুল,তুমি যতবারই ঠেলে সরাচ্ছিলে সেগুলো ততবারই তোমার কপালের কিনারা ঘেষে চোখের এককোণে ভিড় জমাচ্ছিল।শুনেছি,ছেলেরা নাকি রান্নায় গুনবতী মেয়েদেরকে খুব সহজেই পছন্দ করে ফেলে।তাই,আমিও আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না।তোমার জন্য মনের মধ্যে আবেগের সঞ্চার হলো।আমি তোমার প্রেমে পড়ে গেলাম।মানুষ বলে,অতি আবেগ নাকি বিবেক কেড়ে নেয়।তারা ঠিকই বলে।হয়তো,এই আবেগই তোমার আর আমার মাঝে একটা দেয়াল তৈরি করে দিয়েছে।বিশাল একটা ফাটল তৈরি করেছে যা তোমাকে আমার থেকে অনেক দূরে সরিয়ে নিয়েছে।আমি যখন তোমার সাথে কথা বলতাম তখন অধিকাংশ কথাই আবেগ দিয়ে বলতাম।পরে যখন সুস্থ মস্তিষ্কে সেই কথাগুলো ভাবতাম,আমি বুঝতে পারতাম একটা কথাও স্বাভাবিক ছিল না।আমি তোমায় নিয়ে সবসময় একটু অস্থির থাকতাম যা তোমাকে আলাদা পেরেশানিতে রাখত।আর এটাই ছিল তোমার দূরে চলে যাওয়ার একমাত্র কারণ।আমি বুঝতে পারছি এসব আমার ভুলের কারণেই হয়েছে এবং আমি সেই ভুল স্বীকারও করে নিয়েছি।আমি অনুতপ্ত।তবে তোমারও এতটা তীক্ষ্ণ হওয়া উচিত হয়নি।যাইহোক,এসবের মাঝেও কিছু কিছু ব্যাপার মনের দরজায় এসে কড়া নাড়ে।মনকে উতলা করে দিয়ে যায়।আবার তোমার ভাবনায় পড়ে যাই।ঠিক সেই দিনগুলির মতো প্রথম প্রথম তোমায় লুকিয়ে লুকিয়ে দেখতাম।এরপর,ধীরে ধীরে জানালার সামনে দাঁড়িয়ে তোমায় দেখা শুরু করলাম।কিন্তু তুমি যখন আমার দিকে তাকাতে আমি আড়ালে সরে যেতাম।সে বিষয়গুলোও তুমি খেয়াল করতে।মনে পড়ে,একদিন তোমাকে খুব সাহস করেই বলছিলাম \'তাকাও’?সেদিন তুমি তাকিয়েছিলে।মনে পড়ে,মাঝে মাঝে তুমি জানালা বন্ধ করে দিতে?আমি একটু ঘাবড়ে যেতাম।আমার ঠিকই মনে পড়ে।ভীষণ মনে পড়ে।ওহ!সেই ফোনালাপগুলি।কত ফাজলামো,হাসি-ঠাট্টা,ছোট ছোট খুশি।আবার প্রায় সময়েই সেই মিষ্টি মিষ্টি ঝগড়া।আর সবশেষে অনুভূতির কথা,ভালো লাগার কথা,ভালোবাসার কথা।তবে একটা ব্যাপার তুমি দেখিয়ে দিলেই।তুমি মাঝে মাঝে বলতে,যেদিন আমি চলে যাবো,দেখি সেদিন আপনি কি করেন।কীভাবে আমাকে ধরে রাখেন।শেষমেশ তুমি সেটাই করলে।আকাশের শুকতারা হয়ে আকাশেই চলে গেলে।যার দিকে তাকালে মনে হয় সে খুব কাছে।কিন্তু বাস্তবে সে নাগালের অনেক বাইরে।আর এদিকে আমি কি করলাম;যত কষ্ট,ক্ষোভ,ব্যর্থতা,হতাশা নিয়ে সন্ধ্যাতারা হয়ে পড়ে রইলাম।সন্ধ্যায় যেমন চারিদিক থেকে আঁধার ঘনিয়ে আসে।সবকিছু নিস্তব্ধ হয়ে যেতে শুরু করে ঠিক তেমনই আমার দিকটা।এদিকে সন্ধ্যার আকাশে মেঘ জমেছে।আমার সন্ধ্যাতারাও তলিয়ে গেছে।কিন্তু হারিয়ে যায়নি।সে তার জায়গাতেই স্থির রয়েছে।তাই আমি মোটেও নিরাশ নই।এখনো আশাবাদী। জীবনের কোনো এক সময়ে, কোনো এক ফাঁকে তোমার চাঁদ যেন আমার পৃথিবীর দিকে অন্তত একবার উঁকি দিয়ে মুচকি হাসি হাসে।
এই গল্পটি একটা প্রেমিকের মনের অনুভূতি দিয়ে সাজানো। সে প্রতিদিন তার ঘরের জানালার এ পাশে বসে প্রেমিকাকে দেখতো। প্রেমিকা ঠিক ও পাশের জানালার কাছেই বসে থাকতো। কিন্তু হঠাৎ একদিন প্রেমিকা আসা বন্ধ করে দিলো। ব্যস্, তারপরেই প্রেমিক কল্পনায় তার পুরোনো স্মৃতি তুলে ধরে।
0 Comments