রনি আজ খুব খুশি। কারণ, আজ সে নতুন জামা পরে স্কুলে যাবে। মায়ের হাতের সেলাই করা কমলা রঙের ফুলেল ছাপের জামাটা সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পরল, হিরোর মতো ঘাড় নাড়িয়ে বলল,— “আজকে তামান্না আমায় দেখে অজ্ঞান হয়ে যাবে!”কিন্তু দুর্ভাগ্য, হঠাৎ পেছনে এক টান!চিৎকার করে বলল রনি, “আরে এ কী! জামার নিচের দিকটা তো ছিঁড়া!”মা বললেন, “ওটা তো গতকাল বেড়াল টান দিছে রশি থেকে। তোর খেয়াল নাই?”রনি তখন হুমড়ি খেয়ে পড়ল এক পুরনো হলুদ জামার ওপর। নতুন জামা আর হলো না, মনটা এমন ভেঙে গেল, যেন লাড্ডু পড়েছে ড্রেনে।রনি রাগচটা মুখে স্কুলে গেল। গেটের সামনে দাঁড়িয়ে একহাত কোমরে রেখে ভাবল, “আজ তো সবার নজর আমার জামায় পড়বে!”হ্যাঁ, নজর পড়ল ঠিকই। তবে শ্রদ্ধায় নয়, সন্দেহে। কারণ, জামার পকেট থেকে বেরিয়ে আছে একটা মোজা! সেটা রনির নয়, রনির ছোট ভাইয়ের।বন্ধুরা হাসতে হাসতে বলল,— “এই রনি, তোর পকেটে তো মোজার গাছ জন্মাইছে?”রনি লজ্জায় পকেট চেপে ধরল। তখনই ক্লাসের টিচার এলেন। রনি বলল,— “স্যার, আজকে আমার শনি... মানে, আজকে আমার শনি-গ্রহে খারাপ সময় চলছে।”স্যার গম্ভীর হয়ে বললেন,— “তাই বুঝি? তাহলে বোর্ডে এসে অংকটা করো।”রনি বোর্ডে গিয়ে অংক করতে গিয়ে লিখল:৩x + ২y = মোজা।ক্লাস হেসে গড়াগড়ি! স্যার বললেন,— “তোর অংকে মোজা ঢুকে গেছে, এখন দ্যাখ আমি কি করি!”পড়ার সময় টিফিনে খেতে গিয়ে দেখে, মায়ের দেওয়া পরোটা টিফিনবক্সে নেই, আছে ভেজা গামছা।রনি হঠাৎ বুঝতে পারল—আজ আসলেই শনির দশা চলছে।তবু দিনটা শেষ হতেই চলেছে। রনি বাড়ি ফেরার সময় বলল,— “আজ যা হইছে, কালও যদি এমন হয়, তাহলে আমি স্কুলে নয়, সরাসরি গ্রহে চলে যাব!”সে রাতে রনি আবার নতুন জামা খুঁজে, পকেট দুটো উল্টে ভাল করে দেখে রাখল।তবু আয়নায় তাকিয়ে সে নিজেকেই বলল,— “তোর মতো কারও জীবনেই এমন \'মোজাময় শনি\' নামে না। ভাগ্যবান রে তুই, রনি ভাই!”
রনি আজ খুব খুশি। কারণ, আজ সে নতুন জামা পরে স্কুলে যাবে। মায়ের হাতের সেলাই করা কমলা রঙের ফুলেল ছাপের জামাটা সে আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে পরল, হিরোর মতো ঘাড় নাড়িয়ে বলল,— “আজকে তামান্না আমায় দেখে অজ্ঞান হয়ে যাবে!”
0 Comments