

✍️ মোবারক হোসেনজাফর ঢাকার একটি নামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। দাদা ছিলেন এক মহান মুক্তিযোদ্ধা। পরিবারের সবাই তাঁর বীরত্বগাঁথা মুখস্থ করে রেখেছে। তবে জাফর দাদার সবচেয়ে পছন্দের নাতি—কারণ একটাই—জাফরের সব অলসতা আর আলস্য দাদা “বীরোচিত বিশ্রাম” বলে ঘোষণা দিয়েছেন।একদিন বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সেমিনারে সবাই নিজের পরিচয় দিচ্ছে—“আমি একজন উদ্যোক্তা।”“আমি ক্লাইমেট অ্যাক্টিভিস্ট।”“আমি নারীবাদী লেখক।”জাফরের পালা এলো।সে গম্ভীর মুখে বললো,“আমি মুক্তিযোদ্ধার নাতি।”সবাই চুপ। শিক্ষকেরাও মুগ্ধ। কেউ কেউ হাততালিও দিল।একজন বললো, “কী অবদান তোমার?”জাফর মাথা উঁচু করে বললো, “আমি যুদ্ধ দেখিনি, কিন্তু রক্তে বইছে সেই ইতিহাস। আমি তাই প্রতিদিন সকাল ১০টার আগে ঘুম থেকে উঠি না, যুদ্ধকালে তো দাদাও বিশ্রাম পাননি। আমি তাঁর হয়ে বিশ্রাম নিচ্ছি।”সবাই “ওয়াও!” বললো।পরের সপ্তাহে সে ছাত্র সংসদের প্রতিনিধি হয়ে গেল।এরপর একদিন ক্যাম্পাসে বক্তৃতা—“আমরা যারা মুক্তিযোদ্ধার বংশধর, আমাদের দায়িত্ব বিশাল। টিউশনি না করে দেশের ভবিষ্যতের কথা ভাবা আমাদের কর্তব্য। তাই আমি এখন বাসায় বসে টিভি দেখি—খবর, ইতিহাস, গানবাজনা—সব কিছু।”দাদাকে একদিন জিজ্ঞেস করা হলো,“জাফর তো দিনরাত বাড়িতেই বসে থাকে, কিছু করে না, আপনার কী মনে হয়?”দাদা হেসে বললেন,“ছেলেটা বুদ্ধিমান। আমি গুলি চালাইছিলাম পাকিস্তানিদের বুকে, আর ও চালায় বুদ্ধির গুলি মানুষের মুখে।”
0 Comments