অদ্ভুত বন্ধন

শিরোনাম - অদ্ভুত বন্ধনলেখায় -রাদিয়াহ সারওয়াবাচ্চারা উঠোনে খেলা করছে। আকাশে গুটিকয়েক তাঁরা মিটিমিটি জ্বলছে।আজ চাঁদ টা কে কেমন যেন হলদে লাগছে। চাঁদের গায়ে হলুদ বুঝি! আমি আকাশ থেকে চোখ নামিয়ে আবারো বাচ্চাদের দিকে নজর দিলাম।কি এক সরলতা ছেয়ে আছে তাদের চোখে-মুখে। পাঁচ বছরের ছোট্ট ইকরা বলছে আজ আমি রান্না করে খাওয়াবো।তোমরা হবে আমার মেহমান।আমি কেনো যেনো অতি মনোযোগ সহকারে সরল মনে বলা কথাগুলো শুনতে লাগলাম।আর চেয়ে রইলাম কিভাবে অতিথি আপ্যায়ন করবে এই ছোট্ট ইকরা।অতি যত্নের সঙ্গে মাটির খেলনা চুলায় মাটির ছোট্ট পাতিল বসিয়ে ছোট একটা চামচ দিয়ে নাড়তে লাগলো সে।বাকি বাচ্চারাও অধীর আগ্রহে দেখছে। তবে একজন একটু পরপর ই হাত তালি দিচ্ছে আর অস্থিরতার সঙ্গে বলছে তাড়াতাড়ি! তাড়াতাড়ি! খুব ক্ষুধা লেগেছে।যেনো এ খাবার গুলো সত্যিকারের খাবার!ইকরার মুখে হাসির ঝিলিক।আজ সে এত জনকে খাওয়াতে পারবে ভেবেই হয়তো তার আলাদা খুশি লাগছে। মাটির ছোট্ট পাতিল থেকে অতি সাবধানে ভাত তরকারি বেড়ে দিচ্ছে ইকরা সবার বাসনে। সবাই চেটেপুটে খেয়ে নিচ্ছে।আর খাবারের তারিফ ও করছে। অতঃপর পানি পান করাতেও ভুললো না।যাক ইকরা মেহমানদারি টা বেশ ভালো মতোই করে নিয়েছে।এবার তাদের খেলাধুলার পালা।সবাই গোল হয়ে বসে গেলো। শুধু একজন আসা বাকি রইলো।সবাই তার জন্য অপেক্ষা করছে।আমি মজার ছলেই বললাম, আরে তোমরা শুরু করে দাও না।ও না হয় পরেই আসবে।তারা পাল্টা জবাব দিলো- না না, আমরা কাউকে ছাড়া খেলা শুরু করি না।যা করি একই সাথে করি।আমি মুগ্ধ হয়ে চেয়ে রইলাম। ভাবলাম, বাহ্! ভালোই তো। কি এক একতা,এক ভালোবাসার বন্ধন এদের মাঝে!পেছনে ইকরার বাবা আর ফুফুর চেঁচামেচি শুনে আমার সম্বিত ফিরে পেলো। তারা একপ্রকার কলহে জড়িয়ে পড়েছেন। জায়গা সম্পত্তির কলহ! আর আমার বুকটা ছ্যাৎ করে উঠলো। ভাবতে লাগলাম ছোটবেলায় নিশ্চয়ই এরাও ইকরা দের মতো একসাথে খেলেছিলেন। এদের মাঝে ও তো এক ভালোবাসার বন্ধন ছিল।আর আজ কিনা এদের মধ্যে কলহ বিবাদ সৃষ্টি হয়েছে!তবে কি এসব একতা, ভালোবাসা স্রেফ ছোটবেলা পর্যন্ত ই সীমাবদ্ধ?

অদ্ভুত বন্ধন

• রাদিয়াহ সারওয়া
• 21/04/2025
• 13 views
• 0 Comments

এ গল্পে ছোটবেলায় একসাথে বেড়ে ওঠা ভাইবোন দের এক চিত্র এবং বড় হওয়ার পর পরিবর্তনের আরেক চিত্র দেখানো হয়েছে। বাস্তবতার এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করা হয়েছে।

See More Read Full Story