নাম তার বিলাই। তবে পাড়া-প্রতিবেশী তাকে ডাকে \"বিলাই ম্যাঁও\" বলে। কারণ, সে হঠাৎ হঠাৎ এমনভাবে “ম্যাঁও” করে ওঠে, যেন সে কোনো দুঃখিনী কবিতার মিউজিক্যাল বিট।বিলাই একজন প্রকৃত সামাজিক প্রাণী। সকালের প্রথম আলো ফুটতেই তার ডিউটি শুরু—কখনও চেয়ারম্যান সাহেবের উঠোনে গিয়ে ঘোরে, কখনও বাজারের দোকানে গিয়ে মাছের আঁশ খোঁজে। তবে তার মূল কাজ: কে কার বিরুদ্ধে কী বলল, কে কার সাথে হাত মেলাল, কে ফেসবুকে কার ছবিতে লাভ রিঅ্যাক্ট দিল—সবকিছুর আপডেট রাখা এবং তা অন্যদের কানে কানে পৌঁছে দেওয়া।একদিন বিকেলে, গ্রামে এলো এক বয়স্ক সাংবাদিক—একটু আধুনিক ধাঁচের, হাতে ক্যামেরা, চোখে চশমা, মুখে বুদ্ধির রেখা। তিনি বিলাইকে দেখে বললেন,— “এই যে, আপনার তো দেখছি অনেক ইনফ্লুয়েন্স! আপনি কি এই গ্রামের জনপ্রিয় প্রতিনিধি?”বিলাই তখন গা চুলকে হালকা হেসে বলল,— “ম্যাঁও, আমি তৃণমূলের ভাষা বুঝি। কার ঘরে কয়টা ভাত, আর কার ঘরে কয়টা ভোট—সবই আমার জানা।”সাংবাদিক সাহেব মুগ্ধ হয়ে তার ছবি তুলে ফেললেন। পরদিন পত্রিকায় শিরোনাম:“গ্রামের নয়া নেতা: বিলাই ম্যাঁও!”পরের সপ্তাহে ঘটে গেল অবিশ্বাস্য ঘটনা। বিলাই ম্যাঁও-কে ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হলো! পোস্টার ছাপা হলো:“আপনার একটি ভোট দিতে পারেন বিলাইয়ের একশো ম্যাঁও!”মিছিল হলো। মানুষ বললো,— “মানুষ তো মানুষকেই বেছে নিছে, এবার দেখি একটা সত্যিকারের প্রাণী কেমন রাজনীতি করে!”বিলাই ম্যাঁও জয়ী হলো। আর শুরু হলো ‘নয়া আমল’। অফিসে মাছের ঘ্রাণ ছাড়া কেউ কাজ করতে পারত না, কারণ চেয়ারম্যান সাহেবের (মানে, বিলাই ম্যাঁও’র) শর্ত—\"সকালে ইলিশ না পেলে বাজেট পাশ হবে না!\"গরিবরা গেল বিলাইয়ের কাছে সাহায্য চাইতে। বিলাই বলল,— “ম্যাঁও মানে ম্যানেজ করো! চেয়ারম্যানের নীতিতে দুধ আগে, পরে দুর্দশা!”গল্পের শেষ দিকে, সাংবাদিক সাহেব আবার এলেন ফলো-আপ নিতে। জিজ্ঞেস করলেন,— “আপনার প্রশাসন তো অনেক সমালোচিত। মানুষ বলে আপনি শুধু নিজের স্বার্থ দেখেন!”বিলাই হালকা হেসে আবার “ম্যাঁও” করল। সাংবাদিক ভাবল, বুঝি দুঃখ পেয়েছে। কিন্তু পরে জানা গেল, পাশের দোকানের মাছ ভাজার গন্ধ পেয়েই সে “ম্যাঁও” করেছে!
নাম তার বিলাই। তবে পাড়া-প্রতিবেশী তাকে ডাকে \"বিলাই ম্যাঁও\" বলে। কারণ, সে হঠাৎ হঠাৎ এমনভাবে “ম্যাঁও” করে ওঠে, যেন সে কোনো দুঃখিনী কবিতার মিউজিক্যাল বিট।
0 Comments