সকালের রোদটা তখনো নরম। কলেজের ভেতরের ছোট্ট টঙের দোকানে একের পর এক কাপে চা তৈরি হচ্ছে। আমি প্রতিদিনের মতো বন্ধুর সাথে বসে চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ চোখ আটকে গেল এক অপরিচিত মুখে—সাদা সালোয়ার কামিজে, হাতে মোটা বই, আর চুলগুলো হাওয়ায় উড়ে এসে বারবার চোখ ঢেকে দিচ্ছিল। মনে হলো, চায়ের স্বাদ যেন হঠাৎ ম্লান হয়ে গেছে, কারণ মিষ্টিটা তো দাঁড়িয়ে আছে সামনেই।
বন্ধু ঠাট্টা করে বলল,
—“চায়ে কি চিনির ঘাটতি?”
আমি হেসে উত্তর দিলাম,
—“চিনি নয়, মিষ্টি সামনেই হাঁটছে।”
এরপর থেকে অদ্ভুত এক অভ্যাস গড়ে উঠল—চা না খেলে যেন দিনই কাটত না। আসলে, চা নয়, ওকেই না দেখলে দিন ফাঁকা লাগত। প্রতিদিন সেই দোকানে বসে থেকে সাহস জোগাড় করতাম, কিন্তু কিছুতেই কথাটা বলা হচ্ছিল না।
অবশেষে একদিন, বুকের ভেতর ধুকপুকানি সামলে এগিয়ে গেলাম। কাপটা হাতে নিয়ে হেসে বললাম,
—“এক কাপ চায়ে তোমাকে চাই।”
সে প্রথমে অবাক হয়ে তাকাল, তারপর ঠোঁটের কোণে খেলে গেল দুষ্টু এক হাসি। বলল,
—“চায়ে বেশি দুধ দিও না, তবে ভাবা যায়।”
তার সেই ছোট্ট মিষ্টি উত্তরেই বদলে গেল আমার পৃথিবী। এরপর থেকে আমাদের চায়ের আড্ডা চলতে থাকল, বন্ধুত্ব গাঢ় হলো, আর অজান্তেই প্রেম এসে জায়গা করে নিল।
আজও যখন আমরা একসাথে বসে চা খাই, আমি মজা করে বলি,
—“চা ছাড়া বাঁচা যায়, কিন্তু তোমাকে ছাড়া নয়।”
সে তখন হাসিমুখে চায়ের কাপটা ঠোঁটে তোলে, আর আমি বুঝে যাই—আমাদের ভালোবাসার গল্পটা শুরু হয়েছিল এক কাপ চা দিয়েই।
nice