
বাবর আলী আমাদের বাড়ির মানুষ বললেই চলে। ধান কাটা থেকে গরু চরানো—বাড়ির যে কোনো কাজ, সে নিজের মতো করে করত। অদ্ভুত বিষয় হলো, যত বছরই কেটে যাক, তার চেহারায় বিন্দুমাত্র পরিবর্তন আসে না। আমি যখন ছোট, তখনও তার চোখে সেই অদ্ভুত স্থিরতা, কপালে এক ফোঁটা ভাঁজ নেই। আর এখন আমি যুবক হয়েছি, তবুও বাবর আলীর মুখ যেন সময়ের কোনো ছোঁয়া পায়নি।বাবা একদিন গল্প করেছিলেন—অনেক বছর আগে তিনি বাজার থেকে ফেরার পথে রাস্তার ধারে বসে কাঁদতে থাকা এক যুবককে দেখতে পান। ছেঁড়া কাপড়, ভেজা চোখ। বাবা তাকে বাড়ি নিয়ে আসেন। সেই থেকেই বাবর আলী আমাদের সাথে। কোনোদিন বাবার কাছ থেকে এক টাকাও নেয়নি, কিন্তু খেতে? আহা! সে যেন গ্রামের সবচেয়ে ক্ষুধার্ত মানুষ। একবেলা খাবারের জায়গায় দু’বেলা খেলেও যেন ক্ষুধা মেটে না।
0 Comments