মেঘ বাড়ি ( পর্ব- ২)

গ্রামের এক কোণে নতুন একজন এসেছেন—নাম তার অরণ্য। বয়সে তরুণ, পেশায় ইতিহাস গবেষক। শহরের বিশ্ববিদ্যালয়ে বাংলার লোককাহিনী ও গ্রামীণ বিশ্বাস নিয়ে গবেষণা করেন। মেঘ বাড়ির রহস্যময় ইতিহাস শুনে নিজেই এসেছেন ডুমুরিয়ায়।বৃদ্ধ প্রধান পঞ্চায়েত যখন শুনলেন অরণ্য মেঘ বাড়িতে থাকতে চান, তার চোখ কুঁচকে গেল।—“ওই বাড়ি মানুষ নয়, মেঘে থাকে। আপনি থাকবেন?”অরণ্য মৃদু হেসে বললেন,—“ভূতের ভয়ে ইতিহাস থেমে থাকে না, কাকাবাবু।”সন্ধ্যা নামতেই অরণ্য উঠলেন মেঘ বাড়িতে। বাড়ি পুরনো, অথচ একধরনের অদ্ভুত শান্তি যেন ঘিরে আছে—তবুও, বাতাসে একটা গা ছমছমে অনুভূতি লেগে আছে।রাত বাড়তেই হঠাৎ এক সময় বাড়ির জানালায় মৃদু সুর ভেসে এল—\"নিম পাতার কুড়ি আমি, ঝরে যাব কবে...\"অরণ্য চমকে উঠলেন। এই গান তো তিনি আগে শুনেননি, অথচ এত পরিচিত লাগছে কেন?দরজা খুলে বাইরে বেরোলেন। চারদিকে মেঘে ঢাকা, গাঢ় কুয়াশা। হঠাৎ পেছনে ঘুরে দেখেন—এক তরুণী, সাদা শাড়ি পরা, ভেজা চুল, ঠোঁটে সেই গান।—“তুমি কে?”—“আমি... মেঘলা... আমার গল্প জানবে?”অরণ্য আর উত্তর দিতে পারেননি। চারপাশটা হঠাৎ জমে উঠল ধোঁয়ায়। তার চোখ যেন ভারী হয়ে এল, অচেনা ক্লান্তিতে ঘুমিয়ে পড়লেন সেখানেই।সকালে গ্রামবাসীরা দেখল অরণ্য বাড়ির উঠোনে পড়ে আছেন, চোখে বিস্ময় আর হাতে আঁকা এক পুরনো নকশা—মেঘ বাড়ির নিচে একটা গোপন কক্ষের ইঙ্গিত।