গল্প; \'বসুমতি ক্যাফেটারিয়া\'✍নাদিয়া নওশাদ ব্যস্ত নগরী ঢাকার এলিফঅ্যান্ট রোডের বিস্তৃত এক লেকের পাশে ছোট্ট পরিসরে গড়ে উঠেছে \'বসুমতি ক্যাফেটারিয়া\'। প্রতিষ্ঠাতা হাবিবুল ইসলাম একটি বেসরকারি সংস্থায় চাকরিরত ছিলেন। দুবছর হলো রিটায়ার করেছেন। তখন থেকেই তার এই ক্যাফেটারিয়ার পথ চলা শুরু। \'বসুমতি ক্যাফেটারিয়া\' নানারকম খাদ্যায়োজনে ভরপুর। মাছের কাটলেট,ডিমের ডেভিল,ক্যারামেল পুডিং অন্যতম জনপ্রিয় খাবার। তাছাড়া বিফ চাপ,চিকেন চাপ,রুমালি রুটি ও কড়াই গোশত খেতে লাজাওয়াব! চায়ের মধ্যে মালা চা,আদা-লেবু চা,হেজেলনাট কফিও কাস্টমারদের বিশেষ পছন্দ। ক্যাফেটারিয়ার বাবুর্চি সোবহান তার দুজন সহকারী বেলাল ওমনিরকে নিয়ে অসাধারণ কাজ করে। তাদের হাতে যেন সত্যিই যাদু আছে! যে একবার \'বসুমতি ক্যাফেটারিয়া\' এরখাবার খেয়েছে,মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে বারেবারছুটে এসেছে। এখানে যে শুধু ক্যাফেটারিয়াআছে তা নয়,খুবই ছোটখাটো একটা বুক কর্ণারও বিদ্যমান। ছোটদের গল্পের বই,বিভিন্ন সাপ্তাহিক পত্রিকা,ম্যাগাজিন যেমন-আনন্দলোক,সানন্দা,মনোজগত, ক্যানভাস ইত্যাদি খাবারের সাথে সাথেবিক্রি হয়। নানান বয়সের, নানান মতের মানুষের মিলনমেলা সংঘটিত হয় এই \'বসুমতি ক্যাফেটারিয়া\'তে। মূলত বিকেলবেলার নরম রোদের উষ্ণ আবহাওয়ায় নারী-পুরুষ,বন্ধু-বান্ধবীরকলোরবে ক্যাফেটারিয়াটি মুখরিত হয়ে ওঠে। ব্যবসায় যেমন সাফল্য আছে তেমনি লোকসানও আছে। একবার কিছু চাঁদাবাজ,দুষ্ট লোক ক্যাফেটারিয়ায় এসে চাঁদা দাবী করে ব্যাপক ভাঙচুর করে। তখন হাবিবুল ইসলাম সাহেবের অনেক লোকসান হয়। একটু ঘুরে দাঁড়াতে না দাঁড়াতেই মহামারী করোনা ভাইরাসের কবলে পড়ে দেশ ও সমাজ। সব মিলিয়ে\'বসুমতি ক্যাফেটারিয়া\' প্রবল ঝড়ের আশঙ্কায় পড়ে যায়। জীবনযুদ্ধে চরাই-উৎরাই, উত্থান-পতন আসবেই। তবুও হাল ছেড়ে না দিয়ে মনোবল ও সাহসিকতার সাথে এগিয়ে যেতে হয়। হাবিবুল ইসলাম, সোবহান, বেলাল,মনির---এদের অদম্য,অক্লান্ত চেষ্টা ও পরিশ্রমকে পুঁজি করে আজ আরও একবার \'বসুমতি ক্যাফেটারিয়া\'সগৌরবে, স্বকীয়তায় মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে আছে। *সমাপ্ত*
0 Comments