তুষারের “ক্ষুধার অন্ধকার” কবিতায় ক্ষুধাকে শুধু পেটের শূন্যতা নয়, বরং হাড়-মজ্জায় ঢুকে যাওয়া অমানবিক যন্ত্রণার প্রতীক হিসেবে দেখানো হয়েছে। ক্ষুধা মানুষকে হাত পাততে বাধ্য করে, অথচ তৃপ্তির কোনো নিশ্চয়তা নেই। শহরের আলো বাইরের অন্ধকার দূর করলেও অন্তরের অন্ধকার অমলিন থেকে যায়। ক্ষুধা মানুষকে ভালো করে না, বরং নিচে নামিয়ে আনে—যেখানে আত্মার কোনো দাম নেই, কেবল রুটির দামই সব।
ক্ষুধার অন্ধকার
ক্ষুধার অন্ধকার ✍️ লেখক: তুষার ক্ষুধা—এটা শুধু পেটের ভিতরের শূন্যতা নয়। এটা হাড়ে হাড়ে ঢুকে যায়, রক্তের গতি ধীর করে দেয়, মাথার ভেতরে শব্দ তোলে শুকনো নদীর মতো ফাটল ধরা মাটি। একটা রুটি—শুধু একটা রুটি— তাকে পেতে হলে কত হাত থালা বাড়াতে হয়, কত দৃষ্টি ভিক্ষার মতো মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। কেউ দেয় না। তারা বলে, “পরের বার।” কিন্তু ক্ষুধার কোনো পরের বার নেই— এটা এখনই কামড়ে ধরে, এখনই ফুসফুস চেপে ধরে। পেটের ভিতরের গর্জনটা রাতে আরও তীব্র হয়। শহরের আলো গিলে খায় অন্ধকার, কিন্তু আমার ভেতরের অন্ধকারকে কেউ আলো দেয় না। আমি শুয়ে থাকি, শিরদাঁড়া বিছানার মতো শক্ত হয়ে যায়, চোখের পাতায় মায়ের মুখ আসে— কিন্তু সেই মুখটাও ফিকে, ঠোঁট শুকিয়ে আছে, যেন সেও ক্ষুধার্ত। ক্ষুধা কাউকে ভালো মানুষ বানায় না। এটা মানুষকে পশুরও নিচে নামিয়ে আনে, যেখানে রুটির জন্যে তুমি তোমার আত্মাও বিক্রি করে দেবে। কিন্তু বাজারে আত্মার দাম নেই— রুটির দামই সবকিছু।
0 Comments