পারভীনের জীবনটা যেন স্বপ্নের মতো। ঢাকার অভিজাত এলাকায় বিশাল ফ্ল্যাট, দামি গাড়ি, গায়ের গয়না চকচকে। তার স্বামী হাফিজ — নামকরা ব্যবসায়ী, সুদর্শন, মার্জিত, আর অর্থবিত্তে ভরপুর।তবে হাফিজের একটা অভ্যাস—সে খুব দেরি করে বাড়ি ফেরে। রাত বারোটার আগে তাকে বাসায় দেখা যায় না। পারভীন প্রথমে মন খারাপ করত, পরে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।কিন্তু একদিন অদ্ভুত কিছু ঘটল।সকালের দিকে, সবে সাতটা বাজে, দরজায় টোকা। দরজা খুলে পারভীন দেখে, হাফিজ দাঁড়িয়ে আছে। একদম হাস্যোজ্জ্বল মুখে।—\"আজ অফিসে যেতে মন চাইছে না, শুধু তোমার কাছে থাকতে মন চায়।\"এই বলে সে পারভীনকে জড়িয়ে ধরে।ঘণ্টা দুয়েক পর আবার হাফিজ বেরিয়ে যায়।পারভীন অবাক, অবিশ্বাসও হয়। কিন্তু হয়তো অফিসে কাজ কম ছিল—ভাবল।কিন্তু অবাক ব্যাপার হলো, সেদিন রাত ১২টায় আবার হাফিজ এল!তাকে দেখে পারভীন তো চমকে যায়।—\"তুমি তো সকালে ছিলে!\"—\"আমি? সকালে? না তো। আমি তো গতকাল রাতেই বের হয়েছিলাম, সারাদিন মিটিং আর চুক্তির ব্যস্ততায় ছিলাম।\"পারভীন চুপ। তার শরীর অবসন্ন, কিন্তু মনের ভিতর দোলা লাগছে।—“তাহলে সকালে কে ছিল?”এইভাবে কয়েকদিন চলতে থাকল। কখনো সকাল, কখনো দুপুর, কখনো গভীর রাত—হাফিজের মতো দেখতে মানুষ আসে, সহবাস করে, ভালোবাসার কথা বলে, আবার নিরুদ্দেশ হয়ে যায়।পারভীন ক্রমে দিশেহারা হয়ে পড়ে। হাফিজের চোখে-মুখে কোনও কৌতূহল নেই, সে কিছু জানেই না!একদিন সাহস করে পারভীন হাফিজকে সব খুলে বলে।হাফিজ চুপ করে শোনে। তারপর বলে,—\"পারভীন, তুমি কি সত্যি বলছ?\"—\"আমি পাগল না, হাফিজ। তুমি যদি সকালবেলা বাসায় আসো, সেই মানুষটা আমার শরীরের ঘ্রাণ, এমনকি আমার শরীরের খুঁটিনাটিও জানে। ও তুমি না হয়ে কীভাবে সম্ভব?\"হাফিজ এবার চুপচাপ পারভীনকে নিয়ে যান এক হাকিমের (ধর্মীয় ঝাড়ফুঁককারী) কাছে।সেখানে নিয়ে যেতেই হাকিম চমকে উঠে বললেন,—\"আপনার স্ত্রীর শরীর জ্বীনের দ্বারা স্পর্শিত। এবং এ এক দুর্লভ প্রেমপ্রবণ জ্বীন। সে আপনার রূপ ধারণ করে সহবাস করছে।\"পারভীনের শরীর কেঁপে ওঠে।—\"তাহলে আমি যে ভেবেছি, ভালোবাসায় ডুবে আছি, সেটা তো আমার স্বামীর নয়, এক অজানা অদৃশ্য সত্তার!\"জ্বীনের তাড়ার জন্য অনেক চেষ্টা হয়—কোরআনের আয়াত, পানি, ধূপ, কালোজিরা।কিন্তু সেই ছায়া যায় না।পারভীন একদিন আয়নায় নিজের চোখে দেখে—সকালের \"হাফিজ\" এসে পাশে দাঁড়িয়েছে। হঠাৎ তার মুখ বিকৃত হয়ে যায়। তার চোখ দুইটা সবুজাভ, আর হাসি যেন কাঁচ ভাঙার মতো ঠাণ্ডা।—\"আমি তোমার ভালোবাসা পেয়েছি, পারভীন। আমি কাউকে দিয়ে যাব না।\"পারভীন এখন আর জানে না, কার কাছে ঘুমায়, কার সন্তান ধারণ করছে, কার বুকের গভীরে ভালোবাসার উষ্ণতা খোঁজে।হাফিজ তার স্বামী—এতে সন্দেহ নেই।কিন্তু দ্বিতীয় যে \"স্বামী\", সে কী?মানুষ না অন্য কিছু?
পারভীনের জীবনটা যেন স্বপ্নের মতো। ঢাকার অভিজাত এলাকায় বিশাল ফ্ল্যাট, দামি গাড়ি, গায়ের গয়না চকচকে। তার স্বামী হাফিজ — নামকরা ব্যবসায়ী, সুদর্শন, মার্জিত, আর অর্থবিত্তে ভরপুর।তবে হাফিজের একটা অভ্যাস—সে খুব দেরি করে বাড়ি ফেরে। রাত বারোটার আগে তাকে বাসায় দেখা যায় না। পারভীন প্রথমে মন খারাপ করত, পরে অভ্যস্ত হয়ে গেছে।কিন্তু একদিন অদ্ভুত কিছু ঘটল।
0 Comments