

প্রস্তাবনাবাংলাদেশ একটি নদীবিধৌত দেশ। অসংখ্য নদী এই দেশকে জীবন দিয়েছে, আবার নদীভাঙন কেড়ে নিয়েছে বহু মানুষের ঘরবাড়ি, ভিটেমাটি। প্রতিবছর হাজারো পরিবার বাস্তুহারা হয়। নদীভাঙনের পর শুধু আশ্রয় হারিয়েই থেমে থাকে না—মানুষ বেকারত্বে পড়ে, শিশুরা তাদের মৌলিক অধিকার শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। জীবন বাঁচানোর সংগ্রামে তারা বাধ্য হয় শিশু শ্রমে।কিন্তু শিক্ষা হলো সেই আলো, যা অন্ধকার ভেদ করে পথ দেখায়। শিক্ষা বঞ্চনা দূর না হলে সমাজ কোনোদিন পরিবর্তন হবে না। এই নাটকটি সেই সংগ্রাম, সেই স্বপ্ন ও ভালোবাসার গল্প।প্রথম দৃশ্য: বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসসময়: বিকেলস্থান: গাছতলা, পাখির ডাক শোনা যাচ্ছে।(রুহুল ও হাবিবা গাছতলায় বসে কথা বলছে।)রুহুল: হাবিবা, জানো? আমি স্বপ্ন দেখি—আমাদের গ্রামে একদিন সব শিশু স্কুলে যাবে। কেউ নিরক্ষর থাকবে না। কিন্তু নদীভাঙন আমাদের সব কিছু কেড়ে নিয়েছে। শিশুরা আজ স্কুলের বদলে কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে।হাবিবা: (চিন্তিত) তোমাদের গ্রামের জন্য কি কোনো পরিকল্পনা হয়েছে? সরকার বা সমাজ কিছু করেছে?রুহুল: (হতাশ) না। যেন আমরা কেউ নই, আমাদের অস্তিত্ব কারও চোখে পড়ে না। তবু আমি স্বপ্ন দেখি—একদিন সব শিশু বই হাতে স্কুলে যাবে।হাবিবা: (আবেগ নিয়ে) তোমার স্বপ্ন সুন্দর। কিন্তু আমার নিজের পরিবারই তো আমাকে পড়াশোনার অনুমতি দিতে চায় না। বাবার চোখে মেয়েদের উচ্চশিক্ষা মানে নষ্টামি।রুহুল: (দৃঢ় কণ্ঠে) না হাবিবা! এটা তোমার অধিকার। শিক্ষা ছাড়া মানুষ অন্ধকারে বন্দি থাকে। তুমি যদি লড়াই না করো, তবে আরও অনেক মেয়েকে অন্ধকারে আটকে রাখা হবে।(হাবিবা চুপচাপ মাথা নিচু করে। গাছের ফাঁক দিয়ে হালকা বাতাস বইছে, আবহ আবেগঘন।)
0 Comments