সুখ আর সন্তুষ্টির মধ্যে যে একটা বিশাল ফারাক আছে সেটা প্রায়শই বুঝতে পারি না। আসলে কি ফারাক আছে? সুখ কি?সংজ্ঞা কি এর?ব্যাক্তিভেদে উত্তরও ভিন্ন আসবে নিশ্চয়ই। ভিন্ন আসে বলেই, সুখের নির্দিষ্ট কোনো সংজ্ঞা নেই। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা কাউকে বলতে শুনি না যে,সে পরিপূর্ণ সুখী।একটা গোটা সংজ্ঞা দাঁড় করাতে চাইলে, মানুষ মূলত ততক্ষণ অসুখী, যতক্ষণ না তার সব অপরিপূর্নতা মিটে।এবার এখানে একটা দ্বন্ধের সৃষ্টি হতেই পারে।কেউ এসে যদি বলে, আমি সুখী আমার যা কিছু আছে বা যেভাবে আছি।এই ব্যাপারে আমাদের বলার কি কিছু আছে? একটু পিছনে যেতে হবে তাহলে।সুখী ব্যাক্তির জীবনে কখনো না কখনো, চূড়ান্ত চ্যালেঞ্জিং সময় কেটেছে।এটা সব মানুষের জন্য প্রযোজ্য। পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকেই একবার(নূন্যতম) হলেও খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যেতে হয়।যদি পাঁচজনের মত নি,তাহলে তাদের ভাষ্যমতে ওই সময়ে তাদের মনে হয়েছে, কেন এত দূর্ভাগা তারা?এই মনে হওয়াটাকে কি বলে? এটা একপ্রকার অসহায়ত্ব।ওই সময়ে দাঁড়িয়ে তারা কেউই সুখী মানুষ ছিল না।তাহলে কি সুখটা পরিবর্তনশীল?এটা হতেই পারে।আমি তখনই মূলত নিজেকে সুখী বলে দাবী করি,যখন আমি যা চাই, তা পেয়ে যাই।এক্ষেত্রে, আমার পরিপূর্ণতাই আমার সুখের কারণ। এবার আসা যাক, যারা বলে সুখ টা তার নিজের উপর, সে নিজেকে সুখী ভাবলেই সুখী।এটা কতটুকু সঠিক। এই ব্যাপারে কথা বলা সমিচিন নই।কারণ ব্যাক্তির নিজস্ব চিন্তা। তারপরও যদি বলতে হয়,ওই ব্যাক্তিরও কিছু ইচ্ছা বা চাহিদা ছিল,যা পূর্নতা পায় নি।কিন্তু সেসব বাদ দিয়ে, নিজেকে মানিয়ে নেওয়া ব্যাক্তিটি সুখী।এই ব্যাপারে একটা প্রশ্ন বারবার আসে। অপূর্নতা ভেবে,সবার মনেই কখনো না কখনো দীর্ঘশ্বাস আসেই।একটা অভাববোধ কাজ করে। কিছুটা খারাপ লাগাও।মনের অজান্তেই এই \"নাই\" বিষয়টিই তাকে অসুখী করে তোলে। স্বাভাবিকভাবেই মানুষ নিজের মধ্যে যা নেই,তা অন্যর মধ্যে দেখতে পেলে কিছুটা হিংসাবোধ করে,এটা সাধারণ প্রবৃত্তি। সুখটা আসলে আপেক্ষিক বিষয়।কিন্তু সুখী দাবী করার আগে, আমরা এতকিছু ভেবে উত্তর দেয় না।এবার আসা যাক,সন্তুষ্টি নিয়ে। এটা খুবই সাধারণ ব্যাপার। সবার মধ্যেই থাকে। কিন্তু বাস্তবিকই কি তাই? অজান্তেই, সন্তুষ্টিই মনে হয় বেশি জড়িত আমাদের সাথে। কিন্তু কিভাবে? আসা যাক সেই আলোচনায়।ব্যাক্তি মাত্রই সুখী না হলেও, সন্তুষ্ট অবশ্যই। সুখ এবং সন্তুষ্টি এতটা নিখুঁতভাবে জড়িত, আমরা নূন্যতম ফারাক বুঝতে পারি না। একজন অপরিপূর্ন ব্যাক্তি সুখী না হলেও, সন্তুষ্টিটা ধরে রাখার চেষ্টা করে সবসময়ই।এই দুটি বিষয় আমাদের বেঁচে থাকার মূল সঞ্চালক বলা যায়।একজন অবুঝদার মানুষ,নিজেকে বুঝ দেয় এভাবে -স্রষ্টা যা দিয়েছেন অনেক, যেভাবে আছি ভালো আছি,সুখে আছি,অনেকর তো তাও নেই।Yes,we got the point, এটাই হলো সন্তুষ্টি। আমরা যা পায়,আর যা পায় না সব মিলিয়ে সন্তুষ্ট থাকি।মানুষ হলো সাগরের মতো,এদের চাহিদা বিশাল,পরিপূর্ণতাও অনেক টা কম।এই কম বা বেশি কে তারা চালিয়ে দেয়-যা আছে অনেক আছে, আমরা ভালো আছি বলে। তাহলে?মানুষ সুখী হতে চাইলেও তার অবচেতন মন বারবার শূন্যস্থানের কথা মনে করিয়ে দেয়।তখনই মনে হয়, যা আছে অনেক, আমি খুশি।এই খুশিটাকে কি এককথায় সন্তুষ্টি বলে না? এবার যদি কেউ প্রশ্ন করে,পরিপূর্ণতাই কি সুখ? উত্তরে আমি বলবো,মনের প্রশান্তিটাই সুখ।তবে? সন্তুষ্টির ক্ষেত্রেও তো আমরা মনে প্রশান্তি পায়। সত্যি কি তাই?সন্তুষ্টি আমরা তখনই আনি,যখন বুঝি যা পায় নি তা আর পাওয়া যাবে না। এই \"না\" টাই মনে ক্লান্তি তৈরি করে। আর ক্লান্তি থাকা মনে সুখের বাস হয় না।কিন্তু বেঁচে থাকার তাগিদে আমরা অসুখী মনকে সন্তুষ্টি দিয়ে মানিয়ে নি।বাস্তবে, কোনো মানুষ কখনোই পরিপূর্ণ সুখী হয় না,স্রষ্টা হয়তো সেটা হতে দেয় না।একজন পরিপূর্ণ সুখী ব্যাক্তি, নিজেকে সবকিছুর উর্ধ্বে ভাবা শুরু করলেই নাস্তিকতার পথে আগাতে থাকে। হতে পারে অতি আত্মবিশ্বাস জন্মায় কিংবা অহংকার। স্রষ্টা তাঁর সৃষ্টিকে প্রতিনিয়ত নিজের উপস্থিতি বুঝিয়ে দেন বলেই সবার মধ্যে কিছুটা \"না\" এর প্রভাব রেখেই দেন।ওই \"না\" টুকুই সর্বদা মনে করিয়ে দেয়,স্রষ্টা চাইলেই সব নিয়ে নিবে,চাইলেই সব দিবে কিংবা কিছুটা দিবে।যাইহোক, সুখ বনাম সন্তুষ্টির এই আলোচনায়,কেউ জয়ী না।বরং,দুটোই অপরিহার্য।ব্যাক্তি সুখী না হলেও সন্তুষ্ট হয় আর সেটাই তার অনুপ্রেরণা। আবার সন্তুষ্টিকেই কেউ কেউ সুখ আখ্যা দেয়। সুতরাং,সুখী প্রতিটি ব্যাক্তি মাত্রই সন্তুষ্ট🌼
সুখ বনাম সন্তুষ্টির এই আলোচনায়,কেউ জয়ী না।বরং,দুটোই অপরিহার্য।ব্যাক্তি সুখী না হলেও সন্তুষ্ট হয় আর সেটাই তার অনুপ্রেরণা। আবার সন্তুষ্টিকেই কেউ কেউ সুখ আখ্যা দেয়। সুতরাং,সুখী প্রতিটি ব্যাক্তি মাত্রই সন্তুষ্ট🌼
0 Comments